লাকসামে ‘স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নেতৃত্বে’ পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম

কুমিল্লার লাকসামে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসা পুলিশের এক সদস্যকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ সময় নারীসহ অন্তত চারজন মারধরের শিকার হন। স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় এক নেতার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের মনপাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন লাকসাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন।

আহত সাদ্দাম হোসেন ফেনীর দাগনভূঞা থানায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত। তিনি ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে নিজ গ্রাম মনপালে এসেছিলেন। তাঁকে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সাদ্দাম হোসেনের অভিযোগ, লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমরান হোসেনের নেতৃত্বে অন্তত ২৫ জন তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সাদ্দাম হোসেনের ভাই বেলাল হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি পলাতক। বেশ কিছুদিন আগে ওই গ্রামের বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এমরান হোসেন বেলালের বাড়ির পাশে একটি দলীয় ব্যানার টাঙান। দুই দিন আগে শিশুরা খেলার ছলে ঢিল ছুড়লে ব্যানারটির কিছু অংশ ছিঁড়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এমরান ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে ওই বাড়ির সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।

স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, একই দিন রাতে এমরানসহ অন্তত ২৫ জন ওই বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে হইহুল্লোড় শুরু করেন। এ সময় পুলিশ সদস্য সাদ্দাম মুঠোফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলো জ্বালিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। হইহুল্লোড় দেখে তিনি ফ্ল্যাশলাইটের আলো তাঁদের দিকে ধরে কী হয়েছে জানতে চান। এ সময় এমরান উত্তেজিত হয়ে আলো বন্ধ করতে বলেন এবং তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। সাদ্দাম হইহুল্লোড় করতে বারণ করে ঘরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরই এমরান দলবলসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। হামলাকারীরা পুলিশ সদস্য সাদ্দামসহ ঘরে থাকা তাঁর মা, ভাইসহ অন্যদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে এক পর্যায়ে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। সেখানে গিয়েও তাঁরা তাঁকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় বাড়ির অন্যরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে তিনিসহ আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।