সাতক্ষীরায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের নামে হত্যা মামলা

সাতক্ষীরা শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আমিনুর রহমানসহ ৭ জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরার তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান ও সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইনামুল হকসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রামের মফিজউদ্দিন সরদারের ছেলে নিহত আমিনুর রহমানের ভাই সিরাজুল ইসলাম (৫৪) বাদী হয়ে আজ সোমবার সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

বিচারক নয়ন কুমার বড়াল বাদীর লিখিত অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন— সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ও সম্প্রতি সাতক্ষীরা থেকে বদলি হওয়া সাবেক পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইনামুল হকসহ সদর থানার চারজন উপপরিদর্শক, একজন সহকারী উপপরিদর্শক, ছয়জন কনস্টেবল, গোয়েন্দা পুলিশের তিনজন উপপরিদর্শক, আট জন কনস্টেবল ও পৌরসভার কামাননগরের আওয়ামী লীগের নেতা ইনামুল হক, ইমামুল ইসলাম রণি ও ইউসুপ সুলতান।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রামের মফিজউদ্দিন সরদারের ছেলে আমিনুর রহমান ২০১৪ সালে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে সাতক্ষীরা শহরের কামাননগর কবরস্থানের পাশে মুকুল হোসেনের বাড়িতে একটি ছাত্রাবাসে থাকত। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরের নির্দেশে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়।

ছাত্রাবাসে ঢুকে পুলিশ ছাত্রাবাসের আটজন সদস্যকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। সদর থানার উপপরিদর্শক আবুল কাশেম ছাত্রাবাসে থাকা আমিনুর রহমানের পিঠের বাম দিকে গুলি করে। আমিনুর মেঝেতে পড়ে গেলে তার পায়েও গুলি করা হয়। একপর্য়ায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমিনুর মারা যায়। একই সময়ে পুলিশের গুলিতে মারা যায় মেসের আরও ৬ জন।

ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় মামলার বিলম্বের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তোজাম হোসেন বলেন, ‘সাতক্ষীরার তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির আমিনুর রহমানসহ ৩৬ জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করেছেন। যেটাকে আইনের ভাষায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে।’

চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও সম্প্রতি বদলি হওয়া আরেক পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন তিনি।