এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদবিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলার দুই আসামি হলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সাবেক ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছাদাত প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সম্পদবিবরণীতে সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং অজ্ঞাত উৎস থেকে অবৈধভাবে অর্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ ভোগদখল করার প্রমাণ মেলায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসামি আবুল কাশেম চৌধুরী ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে অবসরে যান। এর আগে তিনি নগরের অলংকার মোড় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে নগর পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নগরের পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী চুনা কারখানা এলাকায় তাঁর বাড়ি। গ্রামের বাড়ি ফেনীর পরশুরামে।
দুদক সূত্র জানায়, মামলায় বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদবিবরণী দাখিল করেন আবুল কাশেম চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম। সম্পদবিবরণীতে আবুল কাশেম চৌধুরী ৫০ লাখ ৮০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেন। তাঁর ব্যাংক হিসাবে টাকা থাকলেও তিনি তা গোপন করেন। এ ছাড়া ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনও হয়। তিনি প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ লেনদেন করেন বিভিন্ন সময়। তিনি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৬ টাকা মূল্যের সম্পদ জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জন করেন।
আবুল কাশেম চৌধুরীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিলেও আয়ের কোনো উৎস দেখাতে পারেননি। স্ত্রী দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে ৪৮ লাখ ১১ হাজার ৯৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেন। এ ছাড়া তিনি ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫১ টাকা মূল্যের সম্পদ তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জন করেন।
গত রোববার দুদক চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সাবেক সহকারী কমিশনার এ বি এম শাহাদাত হোসেন মজুমদার ও তাঁর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদবিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে। মামলাটি বর্তমানে দুদক তদন্ত করছে।